এশিয়া মহাদেশে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় আগরবাতি ধর্মীয় জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ঘর কিংবা ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রশান্তি আর পবিত্রতার আবেশ ছড়াতে আগরবাতির সৌরভের জুড়ি নেই।
কিন্তু এই আগরবাতিকে সিগারেটের চেয়েও বিপজ্জনক বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। বলেছেন, এর ধোঁয়া বাইরে থেকে আপনার মনকে যতই প্রশান্ত করুক, দেহের ভেতরের জন্য তা সিগারেটের চেয়েও ক্ষতিকর।
এমনকি এ থেকে হতে পারে ক্যানসারও!
চীনের বিজ্ঞানীদের পরিচালিত ২০১৫ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, জ্বলন্ত আগরবাতির ধোঁয়ার সঙ্গে অতি সূক্ষ্ম পদার্থের কণা বের হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। গবেষকদের দাবি, এই সূক্ষ্ম কণাগুলো খুবই বিষাক্ত। এগুলো আমাদের দেহের কোষে গিয়ে আক্রমণ করার ক্ষমতা রাখে।
জিনগত পরিবর্তনের ঝুঁকি
গবেষণাটিতে দেখা গেছে, আগরবাতির সুগন্ধি ধোঁয়ায় তিন ধরনের টক্সিন বা বিষাক্ত উপাদান রয়েছে – মিউটাজেনিক, জিনোটক্সিক এবং সাইটোটক্সিক। এই উপাদানগুলো প্রাণিকোষে জিনগত পরিবর্তন আনতে পারে, যা দেহে ক্যানসার জায়গা করে নেয়ার পূর্বশর্ত।
ক্যানসার ছাড়াও ফুসফুসের বিভিন্ন রোগের পেছনে এই টক্সিন তিনটি দায়ী। জিনগত পরিবর্তন ডিএনএ’তেও পরিবর্তন আনতে পারে, যা অবশ্যই ভালো কিছু নয়।আগরবাতি-ধূমপান-সিগারেট-ক্যানসার
যেভাবে দেহের ভেতর কাজ করে আগরবাতির ধোঁয়া
আগরবাতির ধোঁয়া শ্বাসের সঙ্গে টেনে নেয়ার সাথে সাথেই সূক্ষ্ম বিষাক্ত উপাদানগুলো বাতাসের সঙ্গে দেহের ভেতর ঢুকে যায়। একেকবার শ্বাসগ্রহণের সঙ্গে ৬৪টির মতো উপাদান ভেতরে ঢুকে যেতে পারে, যা থেকে হতে পারে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের প্রদাহ।
আগরবাতির ধোঁয়ায় থাকা কণিকাগুলো অতিরিক্ত সূক্ষ্ম। এ কারণেই একে ক্যানসারের অন্যতম কারণ সিগারেটের চেয়েও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে সিদ্ধান্তে এসেছেন গবেষকরা। কারণ এত সূক্ষ্ম বিষাক্ত কণিকা খুব সহজেই দেহে ছড়িয়ে পড়ে। তার সঙ্গে কৃত্রিম সুগন্ধি ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।